নুসার সাথে পরিচয়
১৯৭৯ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অবঃ) শওকত আলী প্রথম বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে নড়িয়া বি.এল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিজয় মঞ্চ থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠির উন্নয়নের জন্য অলাভজনক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে “নড়িয়া উপজেলা বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা’র নাম ঘোষণা করেন। পরবর্তীকালে এ নামটি পরিবর্তিত হয়ে নড়িয়া উন্নয়ন সমিতি (নুসা) অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত নাম ‘নুসা’ হয়।
নুসা’র দৃষ্টি, লক্ষ্য, মূল্যবোধ ও উদ্দেশ্য
নুসা প্রত্যাশা করে সকলের জন্য সমান সুযোগ বিদ্যমান এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা।
লক্ষ্য
নুসা‘র লক্ষ্য প্রান্তিক জনগোষ্টির অধিকার অর্জনে তাদের সক্ষমতা
ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।
মূল্যবোধ
- সুশাসন
- লিঙ্গ সমতা
- মানবাধিকার সমুন্নত করা
- সক্রিয় অংশগ্রহণ
উদ্দেশ্য
- সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক মানুষের অধিকার ও প্রবেশাধিকার প্রতিষ্ঠা করা
- টেকসই জন্য প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নত করা উন্নয়ন।
- নির্মাণের জন্য মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিকাশ করা সমৃদ্ধ সমাজ।
- জলবায়ু দ্বারা সৃষ্ট পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা পরিবর্তন.
- বাস্তবায়নে নুসা এর ব্যবস্থাপনা ক্ষমতা বৃদ্ধি করা মান উন্নয়ন কার্যক্রম এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি মধ্য-স্তরের সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতির জন্য।
নুসা এর ভূমিকা
কার্যক্রম:
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর দারিদ্র বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সংস্থার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে বহুমুখী সেবা প্রদানের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এর কর্ম-পরিধি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিগত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে মানুষের জীবনযাত্রা পুনঃগঠনসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরবর্তী পরিস্থিতিতে অভিযোজন সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করার মাধ্যমে এর কাজের পরিসর আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা, আইন সহায়তা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিকসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি জোরদারকরনের লক্ষ্যে এর কর্ম এলাকায় বিভিন্ন কর্মসুচী বাস্তবায়ন হচ্ছে। বর্তমানে নুসা’র কর্মসুচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৩০টি শাখার মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরীর মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠির একটি অংশকে মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠিতে পরিনত করার উদ্যোগী ঋণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জুন ২০ পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে প্রায় ১১৫০.২৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরন কওে প্রায় ৪০ হাজার পরিবারের কর্ম সংস্থান সৃষ্টিতে একটি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে সংস্থা। তাছাড়া ঋণ বিতরনের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন আয়বৃদ্ধিমুলক প্রশিক্ষণ ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরনে কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে তাদের সক্রিয় অংশীদারিত্ব তৈরী করা হয়েছে। বেকার যুবক যুবতীদের আত্মকর্ম সংস্থানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কারিগরী প্রশিক্ষণ প্রদান করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করার মত একটি মহৎ কাজ চলমান রয়েছে। যার ফলে এ পর্যন্ত ৮০১ জন ছেলেমেয়ে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ শেষ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে ৫৩৭ জন বিভিন্নভাবে আত্ম-কর্ম সংস্থানের সুযোগ পেয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে আয় রোজগার করে পরিবারের সচ্ছলতা এনেছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সমুন্নত রাখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাছাড়া সংস্থাকে প্রতিবন্ধী বান্ধব করার লক্ষ্যে সংস্থার মানবসম্পদ নীতিমালায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুযোগ রাখা হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনাসহ সংস্থার নারীদের জন্য নারী বান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরী করা হয়েছে।
এছাড়া সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের আওতায় ভিক্ষুক পূনর্বাসন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়ক উপকরণ প্রদান, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও নলকূপ বিতরণ, গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, স্থানীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা-ঘাট ইত্যাদি সহায়তা করে জনগণের দৌরগোড়ায় সেবা পৌছে দেওয়া হচ্ছে। মহিলা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় ভিজিডি, মাতৃত্বকাল ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদারদের জন্য সুবিধাপ্রাপ্ত মহিলাদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন জীবন দক্ষতা ও আয়বর্ধকমুলক প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিবছর প্রদত্ত স্বল্প অনুদানের মাধ্যমে দরিদ্র মহিলাদের আত্মকর্ম সংস্থান এর লক্ষে তাদের সেলাই প্রশিক্ষণ ও বিনামুল্যে মেশিন বিতরণ , বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এছাড়া সরকারী মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প ৬৪ জেলা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১৮০০০ বয়ষ্ক মহিলা ও পুরুষকে স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন করা হয়েছে ও জাজিরা উপজেলায় ২০৪০০ জনকে স্বাক্ষর জ্ঞান সমৃদ্ধ করার জন্য কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। উল্লেখিত ছাড়াও বই পড়া, দিবস উদযাপন করে সচেতন করা ইত্যাদি কার্যক্রম নুসা চালিয়ে যাচ্ছে।